শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সোনাইমুড়ি ও চাটখিলে ৩ পুলিশসহ নিহত ৬

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী ও চাটখিল থানায় হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সোনাইমুড়ীতে ৩ পুলিশসহ অন্তত ৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।   গত ৫ই আগস্ট বিকেল পৌনে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

            স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওইদিন দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থনকারীরা সোনাইমুড়ী বাইপাস এলাকায় জড়ো হয়। এরপর তারা সেখানে আনন্দ-উল্লাস করতে থাকে। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আনন্দ মিছিল থেকে কয়েকজন সোনাইমুড়ী থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ওই সময় থানার ভেতর থেকে পুলিশ গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন। এরপর উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে।

            এ সময় পুলিশও গুলি ছুড়ে। হামলা-ভাঙচুর চালালে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে উত্তেজিত জনতা থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। শতাধিক লোক আহত হয়।

            আহতদের মধ্যে ৩৪ জন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে এক পুলিশ সদস্যও রয়েছে বলেও জানা যায়। এ সময় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার দিকে ৩৭ জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে মৃত আনা হয়। বর্তমানে ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে।

আহতদের বেশির ভাগই সোনাইমুড়ীর। নিহত ৩ জন সোনাইমুড়ী এলাকার বাসিন্দা।

            নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত ৩ পুলিশ সদস্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তখন ১৩ জন পুলিশ সদস্য সেখানে ছিল। এর মধ্যে তিনজন পুলিশকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ধোঁয়ায় ভবন ছেয়ে আছে। পুরো ভবন রিকভারি করার পরে প্রকৃত বিষয়টি বুঝা যাবে। তবে আরো একজন পুলিশ সদস্য মারা গেছে বলে জানা গেলেও তা পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

            তিনি আরো জানান, সাধারণ মানুষ ৩ জন কেউ বলতেছে দু’জন মারা গেছে। বেঁচে যাওয়া এক পুলিশের বরাত দিয়ে এসপি আরো বলেন, প্রথমে আন্দোলনকারীরা আক্রমণ করে পরে তারা তাদের বাঁচানোর জন্য ওপরে ফাঁকা গুলি করে। নিহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছে- এএসআই মো. নাছির, এসআই মো. বাছির, কনস্টেবল মোশারফ। তবে গিয়াস নামে একজন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন কিনা বিষয়টি এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত না। ধোঁয়ার কারণে আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছি না। সোনাইমুড়ী থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিনের শরীরে ৫টি গুলি বিদ্ধ হয়েছে। তার হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়েছে।     অপরদিকে, বিকেল ৫টার দিকে এক দল বিক্ষোভকারী আনন্দমিছিল নিয়ে চাটখিল থানায় হামলা চালায়। থানা ভবনের ভেতরে প্রায় প্রতিটি কক্ষে হামলা-ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময়ে ৩ পুলিশ সদস্য থানার ছাদে আশ্রয় নেয়, পরে বিক্ষোভকারীরা তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা থানা কম্পাউন্ডের মধ্যে থাকা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ কম্পিউটার প্রশিক্ষণের একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়।

Share This

COMMENTS