বৃহস্পতিবার, ১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান হাসনাত আবদুল্লাহর

ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান হাসনাত আবদুল্লাহর
১২৩ Views

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “চারপাশে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। গতকালও ঢাকায় ষড়যন্ত্র হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিভক্তির ফলে কাদের লাভ? ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের লাভ। যখন আমরা বিভক্ত হব, তখন তাদের পুনর্বাসনের পথ খোলা হয়ে যাবে। তাই আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে, ছাত্রলীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যে বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই, তা হলো সেই বাংলাদেশ, যা প্রবীণরা দিতে পারেননি—একাত্তর পরবর্তী কিংবা নব্বই পরবর্তী সময়ে। আমরা সেই বাংলাদেশ চাই, যেখানে প্রবীণদের অভিজ্ঞতা ও নতুনদের ভয়হীনতা মিলিত হয়ে চব্বিশ-পরবর্তী বাংলাদেশ গঠন করবে।”

আজ সোমবার চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় নাগরিক কমিটি চুয়াডাঙ্গা রাইজিং সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, তা নিয়ে আলোচনা এখনও সময়ের ব্যাপার। তবে, প্রথমে খুনি হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালের বিচার করতে হবে। যারা বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে, যারা জুলুম চালিয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে। বিচার নিশ্চিত না হওয়ার আগেই আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে দেখতে চাই না। আমাদের সবাইকে একত্রিত হয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতের জন্য আওয়াজ তুলতে হবে।”

হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, “গত তিনটি নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি, বা যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের ভোটও সঠিকভাবে গণনা হয়নি। খুনি শেখ হাসিনার নাম ইতিহাসে থাকবে, কারণ দিনের ভোট রাতের ভোটে পরিণত করার রূপকার তিনি। আমাদের কাছে তথ্য আছে যে, গত তিনটি নির্বাচনে খুনি শেখ হাসিনার সঙ্গে কারা আপস করেছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যারা ব্যবসায়িক বা আত্মীয়তা সম্পর্কিত ছিলেন, তাদের নামও সামনে এসেছে।”

একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে হাসনাত বলেন, “তাদের মতামত হচ্ছে, আন্দোলন সফল হয়েছে, ‘তোমরা ঘরে ফিরে যাও, ক্ষমতা আমরা একাই নেব’। আমরা বলছি, দয়া করে ক্ষমতামুখী হবেন না। ক্ষমতামুখী যারা হয়েছে, তাদের দেশ ছাড়তে হয়েছে। ক্ষমতামুখী না হয়ে আপনাদের জনতামুখী হতে হবে। যতক্ষণ আপনি জনতামুখী থাকবেন, তরুণ প্রজন্ম আপনাদের সঙ্গ দেবে।”

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে হাসনাত বলেন, “আমরা জানি, তরুণ প্রজন্ম অনেক প্রতারণার শিকার হয়েছে। বিচারব্যবস্থা, পুলিশ, প্রশাসন—সব কিছুই আমরা দেখেছি কাজ করছে না, এসব ছিল একধরনের মাফিয়া চক্র। প্রশাসনের সংস্কার চাই, বিচারব্যবস্থার সংস্কার চাই, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার চাই। নির্বাচনের আগের রাতে কীভাবে ওসি, ইউএনও, ডিআইজি কিনে ফেলা হয়, তা দেখেছি। শুধু নির্বাচন কমিশনের সংস্কার দিয়ে হবে না; পুলিশকেও গণমুখী হতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দেশ রক্ষা করতে হবে।”

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আন্তর্জাতিক সেল সদস্য মোল্লা ফারুক এহসান, যিনি বলেন, “চুয়াডাঙ্গায় মাদকের ব্যবসা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। দুই হাজার ছাত্র-জনতা প্রাণ দিয়েছে এসবের বিরুদ্ধে। আমরা ‘এ’ এর জায়গায় ‘বি’কে চাঁদাবাজি করার সুযোগ দেব না। মাদক ব্যবসা করার সুযোগ দেব না। যাঁরা আগেও ধান্দাবাজি করেছেন, তাঁরা এখনো করছেন, কিন্তু তাদের জন্য ফল ভালো হবে না।”

সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম, আশরেফা খাতুন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আহ্বায়ক আসলাম অর্ক এবং সাধারণ সম্পাদক সাফ্ফাতুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দে

Share This