শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হেফাজতে ইসলাম-এর আল্টিমেটাম

            ষ্টাফ রিপোর্টার॥ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আগামী ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে সংগঠনের কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন হেফাজতের নেতারা। নেতারা বলেন- দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে আলেমদের মুক্তি না দিলে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।

            গত ২৬শে অক্টোবর দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা।

            হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, গদি রক্ষা করতে হলে অবিলম্বে আলেম-ওলামাদের মুক্তি দিতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই কারাবন্দি মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে নির্বাচন হতে দেবেন না তারা। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের একেক জন নেতার বিরুদ্ধে ৩০-৪০টা মামলা করেছে সরকার। অবিলম্বে হেফাজত নেতাদের মুক্তি দিতে হবে। না হলে গদি ছাড়তে হবে। যদি নিজেদের ভালো চান, অবিলম্বে কারাবন্দি সব আলেমকে মুক্তি দিন। হয়রানি বন্ধ করুন।

            তা না হলে অবস্থা করুণ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ প্রায় তিন বছর ধরে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাগারে বন্দি আছেন মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি মাহমুদ গুনবী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ আরও অনেক আলেম। তাদের এত দীর্ঘ সময় অন্যায়ভাবে সরকার বন্দি করে রেখেছে। আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও তারা মুক্তি পাচ্ছেন না। নতুন মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হচ্ছে। কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি ও প্রশাসনিক চাপ প্রয়োগ করে দেশের কওমি মাদরাসাগুলোকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় রাখা হয়েছে। জুমার খুতবা ও ওয়াজ মাহফিল নিয়ন্ত্রণে বারবার চেষ্টা করা হয়েছে।’

            সম্মেলন থেকে হেফাজতের কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি, ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত নেতাকর্মীদের নামে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে সাত দাবিসহ নতুন ৩টি কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান। কর্মসূচি নিয়ে মহাসচিব বলেন, আগামী ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে কারাবন্দি হেফাজতের সব নেতাকর্মীর মুক্তি ও হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়া আগামী তিন মাসের মধ্যে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের জেলা, উপজেলা ও মহানগর কমিটি গঠন করা হবে এবং আগামী ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে শানে রেসালাত সম্মেলন করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য সব জেলাতেও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

            হেফাজতের ১৩ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে উল্লেখ করে বেফাকের মহাসচিব ও হেফাজতের নায়েবে আমীর মাহফুজুল হক বলেন, ‘হেফাজত ইসলাম রাজনৈতিক সংগঠন নয়, তবে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন। ইসলাম যদি রক্ষা না পায় তবে এ দেশের স্বাধীনতা রক্ষা পাবে না। কেউ যদি ইসলামবিরোধী কাজ করে হেফাজত তার প্রতিরোধ করবে।’ সুত্র: মানবজমিন

Share This

COMMENTS