
১৩ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ

দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার ঢাকা মোড় এলাকায় অটো গাড়ীতে বসে ছিলেন চালক আনোয়ার হোসেন। শুক্রবার সকালে সূর্যের আলো ফুটলেও, তাঁর গায়ে মোটা মোটা গরম কাপড় আর মাথায় মোড়ানো মাফলার।
আনোয়ার হোসেন বলছিলেন, “রোদ উঠেছে, কিন্তু ঠান্ডা বাতাস রোদের তেজ কমিয়ে দিয়েছে। এই রোদ না থাকলে শীত আরও বেশি লাগত।”
রংপুর ও রাজশাহীসহ দেশের ১৩টি জেলায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। রাজশাহীতে আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলতে বোঝায়, যখন তাপমাত্রা ৮.১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, কুষ্টিয়াতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। রংপুর বিভাগের ৮টি জেলা মিলিয়ে আজ মোট ১৩টি জেলায় শৈত্যপ্রবাহ অনুভূত হচ্ছে।
শুধু শৈত্যপ্রবাহের জেলাগুলোই নয়, রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকায় আজ শীতের প্রকোপ তীব্র। গতকাল থেকে শুরু হওয়া ঘন কুয়াশা শীতকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এমনকি যেখানে রোদ উঠেছে, সেখানেও শীতের তীব্রতা কমেনি। ফলে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে।
ছুটির দিন হওয়ায় রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা এমনিতেই কম। তবে শীতের কারণে তা আরও কমে গেছে। নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়েছে, কারণ তীব্র শীতেও তাঁদের জীবিকার তাগিদে বাইরে বের হতে হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে অনেক জায়গায় যানবাহন চলাচলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। শীতজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ায় হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজধানীতে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। আগামীকালও কুয়াশার প্রভাব থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে সামান্য রোদ ওঠার সম্ভাবনাও রয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ জানান, রাজধানীর তাপমাত্রা তিন দিনের ব্যবধানে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেছে, যা শীতের তীব্রতা বাড়ার প্রধান কারণ।
গত ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু গতকাল তা নেমে আসে ১৬ ডিগ্রিতে এবং আজ সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৫১টি স্টেশনের তথ্য অনুযায়ী, আজ মাত্র দুটি স্টেশন ছাড়া সব জায়গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে। কক্সবাজারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি এবং কুতুবদিয়ায় ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বজলুর রশীদ বলেন, “আগামীকাল তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে কুয়াশা পুরোপুরি কাটতে আরও তিন দিন লাগবে।”