২০২৫ সালে প্রাথমিকের জন্য ৫ কোটি ৩২ লাখ বইয়ের অনুমোদন
ষ্টাফ রিপোর্টার॥ আগামী ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে ৫ কোটি ৩২ লাখ ৫৪ হাজার ৭৬০টি পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহ করবে সরকার। এই পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবারাহে ব্যয় হবে ২৭৬ কোটি ৬৩ লাখ ২৩ হাজার ৭৯০ টাকা। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত দু’টি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত দু’টি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৫ শিক্ষাবষের্র জন্য প্রাথমিক স্তরের (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির) পুনঃদরপত্র আহ্বান করা ২৭টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২৮টি লটে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য অভ্যন্তরীণ পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হলে ৪৬টি দরপত্র জমা পড়ে। তার মধ্যে ৪৩টি দরপত্র রেসপনসিভ হয়। টিইসি কর্তৃক ২৮টি লটের বিপরীতে ২৭টি লটে সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৬৫ কোটি ১৪ লাখ ৮২ হাজার ২৫৭ টাকায় ১ কোটি ২৮ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬০টি বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে। প্রতিটি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, কাগজসহ বাঁধাই ও সরবরাহ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৫০ টাকা ৫২ পয়সা। ২৮টি লটের মধ্যে ২৭টি লটের সর্বনিম্ন দরদাতার কাছ থেকে ক্রয়ের সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ করা দর সর্বমোট প্রাক্কলিত দর থেকে ১৮.৬৫ শতাংশ বেশি। ১টি লটের বিপরীতে যোগ্য কোনো দরদাতা প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক স্তরের (চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি) ২০টি প্যাকেজে ৯৫টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সকল শিক্ষার্থীর কাছে তাদের কাঙ্খিত পাঠ্যপুস্তক যথাসময়ে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের (চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি) ২০টি প্যাকেজে ৯৮টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য অভ্যন্তরীণ ই-জিপি পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ১৯৬টি দরপত্র জমা পড়ে। তার মধ্যে ১৭৯টি দরপত্র রেসপনসিভ হয়। টিইসি কর্তৃক ৯৮টি লটের বিপরীতে ৯৫টি লটে সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২১১ কোটি ৪৮ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৩ টাকায় ৪ কোটি ৩ লাখ ৬১ হাজার ৪০০টি বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে। প্রতিটি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, কাগজসহ বাঁধাই ও সরবরাহ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৫২ টাকা ৩৯ পয়সা। সুপারিশ করা দর সর্বমোট প্রাক্কলিত দর থেকে ১৪.১৩ শতাংশ বেশি। এছাড়া আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় সিঙ্গাপুর থেকে দুই কার্গো তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৬৬ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার ৬৮০ টাকা। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে (২০-২১ ডিসেম্বর ২০২৪ সময়ে ৩৭তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। পেট্রোবাংলা থেকে ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। ৩টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরভিত্তিক মেসার্স ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪.৫৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে সর্বমোট ৬৮৬ কোটি ৩৮ লাখ ৭৫ হাজার ২০০ টাকা। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে এ এলএনজি আমদানির প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়। বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘পাবলিক পপ্রকউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে (২৭-২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ সময়ে ৩৮তম) এক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পেট্রোবাংলা থেকে এ ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তব দাখিল করে। ৩টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরভিত্তিক মেসার্স ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪.৪২ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৬৮০ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ৪৮০ টাকা। এর আগে ১৩ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে সিঙ্গাপুর থেকে এক কার্গো এবং সুইজারল্যান্ড থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। এ দুই কার্গো এলএনজির জন্য ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ৯০ লাখ ৫২ হাজার ৮০০ টাকা।