৮ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের চলাচল বন্ধ চৌদ্দগ্রামে বাবুর্চি বাজার সড়কের বেহাল দশা


আবদুল মান্নান\ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঠিকাদারের উদাসিনতায় ৮ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কাজ শেষ না করে উধাও হয়ে গেছে ঠিকাদার। উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের বাবুর্চি বাজার সড়কের অচলাবস্থায় চলাচল ব্যাহত হচ্ছে বাবুর্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাবুর্চি দাখিল মাদ্রাসাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টির পানি ও কাঁদায় বন্ধ যান চলাচল, ব্যবসা বানিজ্যে নেমে এসেছে স্থবিরতা। প্রতিকার পেতে স্থানীয় জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর।
জানা গেছে, ৮.১১ মিটার বাবুর্চি বাজার সড়কটি ৭৬ লাখ ৯৯ হাজার ৬৬৯ টাকায় কাজ পায় মুন্সিরহাট বাজারস্থ ফাতেমা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী অলি আহমেদ মজুমদারের ছেলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাজিয়া ট্রেডার্স। ২০২৪ সালের ৪ঠা জুন শুরু করে একই বছরের ৩রা অক্টোবর কাজ শেষ না করায় ৭ই নভেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে পূর্ব দিকে বাবুর্চি বাজারের মধ্যখান দিয়ে যাওয়া সড়কটি যেন প্রস্তুত করা হয়েছে ধানের চারা রোপনের জন্য। ভুলক্রমে একটি সিএনজি ঢুকে পড়ার পর ৪ জনে ধাক্কা দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করছেন। আধা ঘন্টার চেষ্টায় সফল হয়েছেন ফিরে যেতে। বাজার ব্যবসায়িরা মাথায় করে দোকানে নিচ্ছেন মালামাল। শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীরা হাঁটছেন সড়কের দু’পাশের ব্রিক ওয়ালের উপর দিয়ে।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা স্থানীয় জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দ্রæত কাজটি করার জন্য ঠিকাদারকে বারবার বলেছি। আপনাকে যদি কেউ (চাঁদাবাজ) ডিস্টার্ব করে তাও জানান; না হয় কেন রাস্তার কাজটি শুরু করে ফেলে রেখেছেন। কনফেকশনারী দোকানদার ওমর ফারুক বলেন, ‘মহাসড়ক থেকে এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ ৮টি গ্রামের মানুষ ও বাজারের ক্রেতারা চলাচল করে। ৫/৬ মাস আগে ঠিকাদার রাস্তা খোড়াখুড়ি করে ফেলে রাখে। বৃষ্টি হওয়ায় হাঁটু সমেত জমা পানি ও পরে সৃষ্ট কাদায় চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মাংস ব্যবসায়ী দেলোয়ার বলেন, ‘অন্য জায়গায় গরু জবাই করে ভ্যানে করে মাংস বাজারে আনতে হয়। রাস্তার কারণে এখন ভ্যান আসতে পারেনা। ক্রেতা আসতে পারেনা বিধায় বাজারের ব্যবসায়ীরা লোকসান দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, সড়কের কাজের চুক্তিটি বাতিলের জন্য জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন বলেন, দুর্ভোগ লাঘবে এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়েছি। বাবুর্চি বাজার সড়কটি উন্নয়ন কাজের জন্য কাজ শুরু করেছিল ঠিকাদার, এখন শুনেছি গত ৬/৭ মাস ঠিকাদার কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দেয়ার পর তিনি জানিয়েছেন, ওই কাজ চুক্তি বাতিলের জন্য জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মহোদয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে। জেলা অফিস যদি ঠিকাদারের চুক্তিটি বাতিল করে তাহলে নতুন করে কাজটি অন্যকে দিয়ে করা যাবে অথবা ওই ঠিকাদারকে দিয়ে যদি দ্রæত কাজটি শেষ করাতে পারলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।