রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কুমিল্লায় পারভেজ হত্যা মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান সেকান্দর আলীসহ ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড

কুমিল্লায় পারভেজ হত্যা মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান সেকান্দর আলীসহ ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড

Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লায় পারভেজ হোসেন ওরফে রিপন (৩০) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আদর্শ সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কালির বাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেকান্দর আলী এবং কালিরবাজার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ ১৪ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালত।

            গত সোমবার (২২শে এপ্রিল) বিকালে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ নাসরিন জাহান এ রায় প্রদান করেন। আসামীদের মধ্যে তিন জন পলাতক থাকলেও সেকান্দর আলী চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয় এবং রায় ঘোষণা শেষে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।

            উল্লেখ্য, নিহত পারভেজ কালির বাজার ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হলেও তাকে ছিনতাইকারী হিসেবে উল্লেখ করে প্রথমে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করা হয়েছিল। এ রায় ঘোষণা পর সোমবার আদালত পাড়ায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয় এবং অনেকে মনে করেছেন যে, এই রায় ঘোষণার ফলে আইন ও আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা সুদৃঢ় হবে।

            জানা গেছে, হত্যাকান্ডের শিকার পারভেজ হোসেন (রিপন) কুমিল্লার কালির বাজার ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের আবদুল মবিন প্রকাশ মমিনের ছেলে। তিনি কালির বাজার ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০২০ সালের ১০ই জুন আসরের নামাজের পর সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মনির হোসেনের দোকানের সামনে থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কমলাপুর বাজারে কামালের স মিল সংলগ্নে তাকে প্রকাশে পিটিয়ে ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে কামালের বড়ভাই সেলিম (বর্তমানে মৃত) চিৎকার করে তাদেরকে বের করে দিলে সাজাপ্রাপ্তরা মোকশেদ আলীর কাঠের বাগানে নিয়ে পারভেজের হাঁটু, কনুই ছিদ্র করে তাকে  হত্যা করে। কালির বাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেকান্দর আলী চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ নির্দেশে ও পূর্ব পরিকল্পনা মতো এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে অভিযোগে বলা হয়েছে।

সেকান্দর চেয়ারম্যান

এ ঘটনার মামলায় কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালত হত্যায় জড়িতদের দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ জনের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে আরো ৫ মাসের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি মোঃ শরিফুল ইসলাম।

            সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লা সদর উপজেলার কালিরবাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান কালির বাজারের ধনুয়াখোলা পূর্বপাড়ার হাজী আবদুর রহমানের ছেলে মোঃ সেকান্দর আলী (৬৪), ধনুয়াখোলা তালতলা ফাজিল মাদরাসার পাশের আবদুল লতিফের ছেলে মোঃ শাহিন (৩৯), সৈয়দপুরের আবদুস সাত্তারের ছেলে মোঃ সাদ্দাম হোসেন (৩২), কালিরবাজার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কমলাপুর উত্তরপাড়ার মোজাম্মেল হক মুছার ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম, যশপুরের আহম আলীর ছেলে মফিজ ভান্ডারী, কমলাপুর উত্তরপাড়ার মৃত আবদুর রহমান ডিলারের ছেলে মোঃ কামাল হোসেন (৪২), হোসেনপুরের হারুনুর রশিদের ছেলে আবদুল কাদের (৪৪), রায়চৌঁর মৃত আবদুল ওহেদের ছেলে মোঃ ইব্রাহীম খলিল (৪৫), নারায়ণসারের আশ্রাব আলীর ছেলে মোঃ আনোয়ার (৫০), রায়চৌঁর ইমদাদুল হক ঝারুর ছেলে মোঃ মেহেদী হাসান রুবেল (৩৫), সৈয়দপুরের সিরাজুল ইসলামের ছেলে জয়নাল আবেদীন ওরফে ল্যাংড়া জাহাঙ্গির (৪৫), কমলাপুর দক্ষিণ পাড়ার জয়নাল মাস্টারের ছেলে মোঃ কাওছার (৩২), কমলাপুরের মৃত মোঃ মনিরের ছেলে মোঃ রিয়াজ (৩৩) এবং মনশাসনের সফিক মেম্বারের ছেলে মোঃ বিল্লাল হোসেন (৩৪)।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, মামলায় ৩১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছেন।

            বাদী পক্ষের আইনজীবী আরো বলেন, ১৪ জন আসামীর মধ্যে ১১ জন হাজির ছিলেন এবং মোঃ কাওছার, মোঃ রিয়াজ ও বিল্লাল নামক ৩ জন পলাতক রয়েছেন।

            আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল। তিনি ঘটনার সময়ের সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেন এবং অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তিনি পিসিপিআর যাচাই করে দেখেন নিহত পারভেজের নামে থানায় মামলার রেকর্ড রয়েছে। তদন্তকালীন সময়ে নিহতের মা গোলাপী বেগম বাদি হয়ে আদালতে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আর অজ্ঞাত ৯/১০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দাখিল করলে আদালত তা সিআর হিসেবে মামলা আমলে নেন। একই ঘটনায় এক মামলায় পুলিশ মামলাটি তদন্ত করতে থাকায় আইন অনুযায়ী সিআর মামলা চলমান থাকতে পারে না বলে আদালত সিআর মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে তদন্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ প্রদান করেন। ২০২০ সালের ২৮শে জুলাই মামলাটির তদন্তভার সিআইডি ঢাকা গ্রহণ করে এবং কুমিল্লা সিআইডির এসআই হুমায়ূন কবির তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনি একটি মোবাইলের মেমোরি কার্ড জব্দ করে ঘটনার সময়ে ভিডিও চিত্র সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে যাচাই করেন এবং আসামীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার প্রমাণ হিসেবে মোবাইল নম্বরের সিডিআর যাচাই করেন এবং ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতির প্রমাণ পান।

            পরে ২০২১ সালের ২৪শে এপ্রিল মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান ঢাকা সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগেরর উপ পুলিশ পরিদর্শক মো: সিরাজ উদ্দিন। তিনি তদন্তকালের আসামী কামাল হোসেনকে কোতয়ালী মডেল থানার একটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের জন্য আদালতে আবেদন করেন এবং গ্রেপ্তারের পর বিজ্ঞ আদালত দুই দিন করে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কামাল হোসেনকে রিমান্ডে আনা হলে সে ঘটনা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবান বন্দি প্রদান করে। পরে হোসেনপুরের হারুনুর রশিদের ছেলে আবদুল কাদের (৪৪), রায়চৌঁর মৃত আবদুল ওহেদের ছেলে মোঃ ইব্রাহীম খলিল (৪৫) ও সৈয়দপুরের আবদুস সাত্তারের ছেলে মোঃ সাদ্দাম হোসেন (৩২) কে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারাও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। তদন্ত চলাকালে ধনুয়াখোলা তালতলা ফাজিল মাদরাসার পাশের আবদুল লতিফের ছেলে মোঃ শাহিন আলম (৩৯) বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকায় হজরত শাহজালাল বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার হন এবং ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেন।

            আদালতে দাখিলকৃত চার্জসীট থেকে জানা যায়, নিহত পারভেজ পেশায় একজন ড্রাইভার ছিল। এছাড়া তার ২টি মারতি গাড়ি ও ৩টি অটোরিকশা ভাড়ায় দেয়া হতো। তার তিন জন সন্তানও রয়েছে। ১নং কালির বাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সেকান্দর আলী ২৩ বছর ধরে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। দীর্ঘ দিন চেয়ারম্যান থাকার কারণে এলাকায় তার বেশ প্রভাব থাকে। নিহত পারভেজ ও  সেকান্দার ২০০১ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত উভয়ে বিএনপি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল এবং পরস্পরের মধ্যে অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল। রাজনেতিক পট পরিবর্তনের পর সেকান্দার বর্তমান ক্ষমতাশীন দলের সমর্থক হিসেবে যোগদান করে এবং সরকারি দলের লোক হিসাবে তার ক্ষমতার দাপট দেখাতে থাকে। পক্ষান্তরে ভিকটিম পারভেজ খুন হওয়ার আগ পর্যন্ত তার পূর্বের রাজনৈতিক মতাদর্শে অনড় ছিল। সেকান্দার আলী চেয়ারম্যানের অনৈতিক বিভিন্ন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে নিহত পারভেজ শোচ্চার ও প্রতিবাদী ছিল। এ কারণে চেয়ারম্যান সেকান্দার আলীও নিহত পারভেজ এর প্রতি চরম ক্ষোভ ও প্রতিশোধ পরায়ণ ছিল।

            এ সংক্রান্ত মামলার চার্জসীটে বলা হয়,  মোঃ শাহিন, মোঃ সাদ্দাম হোসেন, মফিজ @ মফিজ ভান্ডারী, মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ কাওছার, বিল্লাল, মোঃ রিয়াজ @ রিয়াদ চেয়ারম্যানের লোক হিসেবে চলাফেরা করত। আনুমানিক ২/৩ বছর আগে চেয়ারম্যান সেকান্দার আলীর ঘনিষ্ঠ সহচর শাহিনকে কে বা কারা গুলি করে। গুলি শাহিনের গায়ে লাগে।  চেয়ারম্যান ও শাহিন ধারণা করে, পারভেজ শাহিনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে। এর জের ধরে পারভেজ এর সাথে চেয়ারম্যানের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। সেকান্দার আলী চেয়ারম্যানও পারভেজকে চাপে রাখার জন্য শাহিনকে গুলি করার ঘটনাটি পারভেজই ঘটিয়েছে মর্মে শাহিনসহ তার ঘনিষ্ট জনদের বুঝায়। যাতে শাহিন’সহ অন্যান্যদের দিয়ে পারভেজকে একটি উচিৎ শিক্ষা দেয়া যায়। ঘটনার দিন আসরের নামাজের পর অনুমান পৌঁণে ৬টার সময় ভিকটিম পারভেজ তার বাচ্চাদের জন্য লিচু কিনতে তার বাড়ি হতে বের হয়ে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের গেইটের সামনে মামলার সাক্ষী মোঃ মনির হোসেনের দোকানের সামনে গিয়ে লিচুর দাম জিজ্ঞাসা করে। পূর্ব পরিকল্পনামতে ওই সময় ঘাতক মোঃ শাহিন (৩৯), ২। মোঃ সাদ্দাম হোসেন (৩২), মোঃ সাইফুল ইসলাম (২১), মোঃ কাওছার (৩২), বিল্লাল (৩৪), মোঃ রিয়াজ @ রিয়াদ, মোঃ ইব্রাহিম খলিল (৪৫), আনোয়ার (৫০), রুবেল (৩৫), জয়নাল আবেদীন @ ল্যাংড়া জয়নাল (৩১), আব্দুল কাদের (৪৩) হাতে চাপাতি, লোহার রড আর হকিস্ট্রিকসহ দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিহত পারভেজকে ঘেরাও করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সেকান্দার আলী চেয়ারম্যানের নির্দেশে পারভেজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক প্রথমে একটি মোটর সাইকেলে উঠানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীতে রাস্তায় চলমান একটি মারতি গাড়ী থামিয়ে তাতে ভিকটিম পারভেজকে উঠিয়ে মারধর করতে করতে কমলাপুর বাজারে আসামী কামালের ‘স’মিলে নিয়ে আসামী কামাল, মফিজ @ মফিজ ভান্ডারিসহ অন্যান্য আসামীরা তাদের হাতে থাকা লোহার রড, হকিস্ট্রিক দিয়ে এলোপাথারীভাবে পারভেজকে পেটাতে থাকে। তখন আসামী কামালের বড় তাই সেলিম (বর্তমানে মৃত) ‘স’মিল থেকে আসামীদেরকে চিল্লাচিল্লি করে বের করে দিলে আসামীগণ ভিকটিম পারভেজকে নিয়ে ‘স’মিল হতে অনুমান ২০০ গজ পূর্ব দিকে মোকশদ আলীর কাঠের বাগানের ভিতর নিয়ে ভিকটিমের হাটু ও কনুইতে পেরেক ঢুকিয়ে হাত পা থেতলে ও হাড় ভেঙ্গে মুমুর্ষ অবস্থায় ফেলে রাখে।

            নিহত পারভেজের বোন জামাই সাক্ষী সোহেল ভূঁইয়াকে পারভেজ এর মামা সাক্ষী চাঁন মিয়া ফোন করে বলে, ‘পারভেজকে সেকান্দার চেয়ারম্যান এবং তার গুন্ডা বাহিনী সৈয়দপুর স্কুল গেট থেকে উঠাইয়া নিয়ে গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ি নিহত পারভেজকে পুলিশের কাছে ছিনতাইকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং স্বাক্ষীরা সেকান্দর চেয়ারম্যানের ভয়ে পুলিশকে প্রকৃত ঘটনা বলেনি। পুলিশের এসআই মাহবুবুর রহমান বাদি হয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনার বিবরণ দিয়ে ১০০/১৫০ জনের বিরুদ্ধে৩০২/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন।

            মামলার বাদির আইনজীবী মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালের ১০ই জুন সন্ধ্যার দিকে ঘটেছিল ঘটনাটি। তখন পুলিশের এসআই মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় ১টি মামলা করে। মামলায় তখন উল্লেখ করা হয়, ছিনতাই করতে গিয়ে গনপিটুনীতে পারভেজ নিহত হয়। পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করলে পরবর্তীতে তার মা গোলাপী বেগম অর্থাৎ নিহতের মা তখনকার চেয়ারম্যান সেকান্দর আলীসহ আরো ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা করার কারণে যেহেতু একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্বে আরো একটি মামলা আছে- বিজ্ঞ আদালত তার মায়ের মামলাসহ পূর্বের মামলাটি একত্র করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেয়। পুলিশের দায়ের করা মামলাটি একসাথে টেগ করার পর সর্বশেষ সিআইডি ঢাকা ঘটনাটি তদন্ত করে। তৎকালীন সময়ে সিআইডির প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর ৪ জন আসামী বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে দোষ স্বীকার করে। ৪ জন আসামীর জবানবন্দিতে যাদের সম্পৃক্ততা বা যাদের নাম বলেছে সিআইডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের ১৪ জনকেই অভিযুক্ত  করে বিজ্ঞ আদালতে চার্জসিট দাখিল করে। এ মামলায় মোট ৬৫ জনের স্বাক্ষীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ৩১ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে চেয়ারম্যান সাহেব মামলাটি আপোষ মিমাংসা  করার চেষ্টা করেছেন। যেহেতু মামলাটি চাঞ্চল্যকর এবং ৩০২ ধারায় আপোষযোগ্য নয়- সেহেতু বিজ্ঞ আদালত স্বাক্ষীদের স্বীকারোক্তিকে বিশ্বাস করে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নাসরিন জাহান দীর্ঘদিন পর গত সোমবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে রায় ঘোষনা করে। সুত্র: কুমিল্লার কাগজ

Share This