আদালতে দেয়া আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি হত্যার আগেই ‘ধর্ষণ করা হয়েছিল’ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্রীকে


ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার ঘটনায় নতুন তথ্য উদঘাটিত হচ্ছে। পুলিশ বলছে, হত্যার আগে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছিলেন কবিরাজ মো. মোবারক হোসেন (২৯)।
আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওই ব্যক্তি বলেছেন, প্রথম দফা ধর্ষণের পর দ্বিতীয়বার ধর্ষণের চেষ্টার সময় শিক্ষার্থীর মা বিষয়টি টের পেয়ে বাধা দিলে তাঁকে হত্যা করেন মোবারক। মাকে হত্যার পর শিক্ষার্থীকে পুনরায় ধর্ষণের চেষ্টা চালান এবং তখন শিক্ষার্থী বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তাঁকেও হত্যা করেন।
গত রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিনুল ইসলাম। এর আগে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত আসামি মো. মোবারক হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ই সেপ্টেম্বর সকাল সাতটার দিকে নগরের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাড়া বাসা থেকে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় মা ও মেয়ে বাসায় একা ছিলেন। এ ঘটনায় ওই দিনই কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করা হয়।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর ওই রাতেই কবিরাজ মো. মোবারক হোসেনকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর বাড়ি জেলার দেবীদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামে। তিনি কুমিল্লা নগরের বাগিচাগাঁও কাজীবাড়ি এলাকায় ভাড়া থাকতেন।
আদালতে দেয়া মোবারক হোসেনের জবানবন্দির বরাত দিয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ ঝাড়ফুঁক করে মাইন্ড ডাইভার্ট (মনোযোগ ঘুরিয়ে) করেই সম্ভবত মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমরা আসামির দেয়া তথ্যগুলো যাচাই ও তদন্ত করে দেখছি।’
ঘটনার পর পুলিশ কেন ধর্ষণচেষ্টার কথা বলেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক তথ্য যেটুকু পেয়েছি, সেটুকুই তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যম ও শিক্ষার্থীদের জানিয়েছি। এরপর আসামি আদালতে জবানবন্দি দেয়ায় বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। মোবারকই একমাত্র খুনি, এরই মধ্যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেছে। জিন তাড়ানোর কথা বলে তাঁকে ওই ঘরে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছিল।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি আজ ঢাকায় এসেছি এ মামলার কাজে। ঘটনার সময় ভিকটিমের পরনে থাকা জামাকাপড়, বিছানা চাদর ও বালিশের কাভারসহ সব আলামত ফরেনসিক ও ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডির ল্যাবে জমা দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে এলে আরও অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমরা শুরু থেকেই সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটি তদন্ত করছি।’