জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে: জাতির উদ্দেশে ভাষণে জানালেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস


বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল আড়াইটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এ ঘোষণা দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
এর আগে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভা শেষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদ ও সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতিকে একটি স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিতে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি। জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে, যাতে জনগণের রায় সরাসরি প্রতিফলিত হয়।”
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি বিকল্প প্রস্তাব জমা দেয়।
প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছিল—সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি বিশেষ আদেশ জারি করে গণভোট আয়োজন করতে হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে নতুন সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা করতে না পারলে প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবটিও প্রায় একই ছিল, তবে সেখানে সময়সীমা অতিক্রমের পর কী হবে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল না।
জুলাই জাতীয় সনদ ও সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আগে থেকেই মতপার্থক্য ছিল। ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ জমা দেওয়ার পর সেই বিতর্ক আরও তীব্র আকার ধারণ করে।
রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্যের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার আগেই আহ্বান জানিয়েছিল—দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে সরকারকে একটি ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দিতে। কিন্তু কোনো দলই তা করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত সরকার নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, যাতে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামো ও সংবিধান সংস্কারের প্রশ্নে জনগণের রায়ই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করে।
