শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তারেক রহমানের সঙ্গে  ফাঁসলেন স্ত্রী জোবাইদা

তারেক রহমানের সঙ্গে ফাঁসলেন স্ত্রী জোবাইদা

ষ্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এ নিয়ে পঞ্চম মামলায় তার সাজা হলো। রায়ে তারেক রহমানের সঙ্গে তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদন্ড দেন আদালত। এটিই জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে প্রথম কোনো মামলার রায়। এ রায়ে কারাদন্ডের পাশাপাশি তারেক রহমানকে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা না দিলে তাকে আরও ৩ মাস সাজা ভোগ করতে হবে। জোবাইদাকে ৩ বছর কারাদন্ডের পাশাপাশি ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে তাকে আরও ১ মাস দন্ড ভোগ করতে হবে। এছাড়া এই দম্পতির অপ্রদর্শিত সম্পদ হিসাবে ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন আদালত।

গত বুধবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান জনাকীর্ণ আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক ২ আসামিকে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা জারিরও আদেশ দেন বিচারক। তারেক রহমানকে ২০০৪ সালের দুদক আইনের ২৬(২) ধারায় ৩ বছর এবং ২৭(১) ধারায় ৬ বছরসহ ৯ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। ২ ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।

অপরদিকে দুদক আইনের ২৭(১) ধারায় জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারার অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছর এবং ২৭(১) ধারায় অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের বিধান রয়েছে।

বুধবার তারেক-জোবাইদার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে আদালত চত্বর ও এজলাসে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা। রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন। রায় ঘোষণার পর তারা খুশিতে উল্লাস প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে রায় ঘোষণার পর আদালতের সামনে ব্যাপক হট্টগোল করে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তাদের অনেকের মাথায়, মুখে কালো কাপড় ও হাতে কালো পতাকা দেখা যায়। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে এ সময় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিলও করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা বার ইউনিটের ব্যানারে আয়োজিত এই বিক্ষোভের ব্যানারে লেখা ছিল : ‘তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা মিথ্যা রায় মানি না, মানব না।’ তাদের স্লে­াগান ছিল ‘ফরমায়েশি রায় মানি না’, ‘তারেক-জোবাইদার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’ ইত্যাদি। এ সময় আদালতে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।

উল্লেখ্য, তারেক রহমান উন্নত চিকিৎসার জন্য উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ২০০৮ সালে লন্ডন যান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই বসবাস করছেন। উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে লন্ডনে গেলেও তার জামিন বাতিল করে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন দেয়া হয়। তিনি না আসায় পলাতক হিসাবে এসব বিচারাধীন মামলায় তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়। ঢাকার আদালতগুলোতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অন্তত ১৯টি মামলা বিচারাধীন। এসব মামলার প্রায় প্রত্যেকটিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

Share This