শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কুমিল্লার ৫৭৩টি হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে ১০৭টি নিবন্ধনবিহীন

কুমিল্লার ৫৭৩টি হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে ১০৭টি নিবন্ধনবিহীন

            মো. লুৎফুর রহমান\ কুমিল্লার ৫৭৩টি বেসরকারি (প্রাইভেট) হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে ১০৭টির নিবন্ধন নেই। এসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন (লাইসেন্স) না পেয়েই কার্যক্রম চালিয়েছে। এর মধ্যে ১০৩টি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেও চারটি প্রতিষ্ঠান আবেদনই করেনি। এছাড়া জেলার ৪৬৬টি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন থাকলেও অধিকাংশের নেই পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল ও যন্ত্রপাতি।

            এদিকে ‘বেসরকারি অবৈধ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হবে’ নতুন সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের টনক নড়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলার ১০৭টি অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

            জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৪৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিবন্ধন নেই। এছাড়া দাউদকান্দিতে ৫৯টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ১০টির, চৌদ্দগ্রামে ২২টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৮টির, নাঙ্গলকোটে ১৮টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৭টির, মুরাদনগরে ৩৫টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৪টির, বরুড়ায় ১৭টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৫টির, বুড়িচংয়ে ৫টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ১টির, লাকসামে ৪০টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৯টির, ব্রাহ্মণপাড়ায় ১৩টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৫টির, চান্দিনায় ২৩টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৫টির এবং আদর্শ সদরে ১৪টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ১টির, তিতাসে ১৮টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৯টির, মেঘনায় ১০টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৮টির, মনোহরগঞ্জে ১১টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৪টির, লালমাইতে ১১টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৬টির এবং হোমনায় ১৮টির মধ্যে লাইসেন্স নেই ৫টির। দেবীদ্বারের ৩৮টির মধ্যে সব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স আছে।

            সূত্র জানায়, লাইসেন্স নেই এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৩টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন প্রক্রিয়াধীন থাকলেও ৪টি প্রতিষ্ঠান আবেদনই করেনি। এছাড়া নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে নগরীর মনোহরপুর এলাকার কুমিল্লা পপুলার হাসপাতাল ও রেইসকোর্স এলাকার কুমিল্লা স্কয়ার হসপিটালসহ গত ৬ মাসে মোট ২১টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জেলার চান্দিনা পৌর এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, আয়কর সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশ সনদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সনদ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, ফায়ার লাইসেন্সসহ ২১টি শর্ত পূরণের মাধ্যমে একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন মেলে। তাই অনেকেই এসব শর্ত পূরণের বেড়াজালে পড়ে নিবন্ধন না পেলেও কার্যক্রম শুরু করে দেন।

            কুমিল্লা বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইস আবদুর রব বলেন, প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন গ্রহণের আগেই অনেকে ¯্রফে ব্যবসার জন্য প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন, এটা দুঃখজনক। নতুন সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। জেলার নিবন্ধনহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অবশ্যই দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

            জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার বলেন, জেলার নিবন্ধনহীন ১০৭টি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একটি তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সম্প্রতি ২১টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Share This