‘দলীয় প্রতীক ছাড়াই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাধা নেই’
ষ্টাফ রিপোর্টার\ দলীয় প্রতীক ছাড়াই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাধা নেই। যদিও স্থানীয় সরকার সিটি করপোরেশন, উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন পরিষদ আইনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার কথা বলা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, দলীয় প্রতীক ছাড়া উপজেলা নির্বাচন হলে আইনের কোনো ব্যত্যয় হবে না। উপজেলা নির্বাচন দলীয় প্রতীকেও হতে পারে, আবার দলীয় প্রতীক ছাড়াও হতে পারে। কোনো দল যদি কাউকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে প্রতীক দেয় সেখানে নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হবে। আবার কেউ স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে চাইলে তাতেও কোনো বাধা নেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি মনে করে সেখানে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দিয়ে দেবে, তাহলে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আবার দল যদি মনে করে, না আমরা এভাবে দলীয় মনোনয়ন কাউকে দেব না, আবার কোথাও কোথাও দেব, কোথাও কোথাও দেব না- দল থেকে সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ আছে।’
গত রোববার স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, আইন সংশোধনের নির্দেশনা তারা পাননি। তাছাড়া প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করতে কোনো বাধাও নেই মর্মে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন। তবে তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয় যদি মনে করে আইন সংশোধন ছাড়া প্রতীক বাদে নির্বাচন সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার বিভাগ উদ্যোগ নেবে।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আইন মন্ত্রণালয় আইনের খুঁটিনাটি বিষয় পর্যালোচনা করছে। এদিকে আওয়ামী লীগ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীকে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তারা প্রার্থী মনোনয়ন দেবে কি না, এখনো তা পরিষ্কার নয়। আইন জারি রেখে সেটিকে উপেক্ষা করা দলীয় সরকারের পক্ষে কতটা সমীচীন- সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অনেকে বলেছেন, সরকার চাইলে আইন সংশোধন করেই দলীয় প্রতীক ছাড়া স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করা উচিত। তা না হলে, সরকারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠতে পারে সরকার নিজেই আইন করে নিজেই মানছে না।
২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেয় এবং এ জন্য এই আইন সংশোধন করে দলীয় প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টি রাখে। যদিও সে সময় মন্ত্রিসভার সদস্যদের অনেকে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল। অবশ্য কিছু ক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল প্রার্থীদের আবার কিছু জায়গায় উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল। এ নিয়ে সরকারের ভেতরেই প্রশ্ন উঠেছিল।
এ দিকে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে বড় ধরনের মতভেদ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রেই স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে দলীয় প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় এমপিদের প্রত্যক্ষ অবস্থান দলের মধ্যে দু’টি ধারার সৃষ্টি করে ফেলে। শুধু স্থানীয় কোন্দলেই বিষয়টি থেমে থাকেনি। একই দলের মধ্যে বহিষ্কার পালটা বহিষ্কারের পাশাপাশি সংঘাত-সংঘর্ষ হতে দেখা যায়। এ ছাড়া দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও ওঠে অনেক ক্ষেত্রে। এ রকম বাস্তবতায় এবার ৫ম বারের মতো ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন না করার পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।