শুক্রবার, ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে নতুন গ্যাসকূপের খনন কার্যক্রম উদ্বোধন

নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে নতুন গ্যাসকূপের খনন কার্যক্রম উদ্বোধন

৯০ Views

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) নতুন গ্যাসকূপে খনন কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। গত সোমবার (২৯শে এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার অম্বরনগর ইউনিয়নের ওয়াছেকপুর গ্রামে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়।

            প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্প। এর আগে গত ২২শে এপ্রিল কূপ খননের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ড্রিলিং রিগ’ স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে বাপেক্সের ২ শতাধিক প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক এ সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন।

            উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাপেক্সের তিনটি কূপের প্রকল্প পরিচালক প্রিন্স মো. আল হেলালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাপেক্সের খনন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী গাজী মো. মাহবুবুল হক।

            এ সময় বাপেক্সের প্রকৌশল বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, ভূতাত্তি¡ক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শামসিয়া মুক্তাদির, বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্পের ড্রিলিং ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

            জানা গেছে, ‘দেশের অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে আমাদের বাড়তি গ্যাস প্রয়োজন’ এই প্রতিপাদ্যে মানুষের চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪৬টি নতুন অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খনন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

            বাপেক্স বলছে, এটির আগে নোয়াখালীর এ অঞ্চল তথা বেগমগঞ্জে ১৯৭৬ সালে প্রথম গ্যাস কূপের সন্ধান মেলে, ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় কূপের সন্ধান মিললে সেগুলো খনন করা হয়। তবে পরবর্তীতে ওই দু’টি কূপে কোনো গ্যাস পাওয়া যায়নি। ২০১৩ সালে তৃতীয় কূপের সন্ধান মিললে খনন থেকে গ্যাস উৎপাদনে যায় এবং ২০১৮ সালে একই কূপে ওয়ার্কওভার (আক্রমণাত্মক কৌশল) চালিয়ে এখন প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

            কূপটির ড্রিলিং ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ড্রিলিং কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কূপটি মাটির নিচে ৩ হাজার ২০০ মিটার খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ৪টি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। খনন শেষে প্রতিটি জোনে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে যা বাখরাবাদ এর মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে।

            প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আল হেলাল প্রিন্স বলেন, ২০২২ সালের ২৫শে এপ্রিল প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া যায়। ২০২৩ সালে সাড়ে ৫ একর ভূমি হুকুম দখল করা হয়। ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে অবকাঠামো তৈরি এবং ২০২৪ সালের ২রা এপ্রিল রিগ নিয়ে আসা হয় এবং ২২শে এপ্রিল স্থাপন করা হয়। এখানে ৩ হাজার ২০০ মিটার পর্যন্ত খনন কাজ করা হবে। চারটি লেয়ারে গ্যাসের সম্ভাব্যতা আছে। যদি গ্যাস পাওয়া যায় এখান থেকে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন হারে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা যাবে। ১২০ দিনে খনন কাজ শেষ করার লক্ষ্য স্থির করা হলেও এর আগে ৯০ দিনের মধ্যেই খনন কাজ শেষে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জাতিকে একটা ভালো খবর দিতে পারবে বলে আশা করছে বাপেক্স।

            বাপেক্সের খনন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী গাজী মো. মাহবুবুল হক বলেন, নিজস্ব যন্ত্রপাতি ও নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ার এবং জনবল দিয়ে বাপেক্স দেশের জন্য কাজ করছে। বর্তমানের জ্বালানি সংকটের সময় বাপেক্স যে ভূমিকা রাখছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে জ্বালানির গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একইভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

Share This

COMMENTS