শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঈদে সড়কে ১৩ দিনে ২৬২ জনের মৃত্যু

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ ঈদুল আজহার ১৩ দিনে ২৫১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৪৩ জন। নিহতদের মধ্যে নারী ৩২ ও শিশু ৪৪ জন। এই সময়ে ৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন। ১৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া, এই সময়ে ১২৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১০৪ জন। যা মোট নিহতের ৩৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং দুর্ঘটনায় ১৩ দিনে ৯৯৮ কোটি ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকার মানব সম্পদের তি হয়েছে। গত সোমবার এক সংবাদ মাধ্যমে রোড সেফ্টি ফাইন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো ‘ঈদুল আজহা উদ্যাপনকালে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনে’ এসব তথ্য জানান। সংগঠনটির পক্ষে ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

            প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৫৩৩টি। এরমধ্যে বাস ৭১টি, ট্রাক ৫২টি, কাভার্ডভ্যান ১০টি, পিকআপ ১৩টি, ট্রাক্টর ৮টি, ডাম্পট্রাক ৯টি, ট্রলি ৩টি, কার্গো ট্রাক ২টি, ট্যাংক লরি ২টি, মাইক্রোবাস ১৬টি, প্রাইভেটকার ১৮টি, এম্বুলেন্স ২টি, জিপ ৩টি, মোটরসাইকেল ১৩৮টি, থ্রি-হুইলার ১০৬টি, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৪৩টি, বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা ১৯টি এবং অজ্ঞাত গাড়ি ১৮টি।

            দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণে দেখা গেছে দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে ভোরে ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, সকালে ২৩ দশমিক ১০ শতাংশ, দুপুরে ২৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, বিকালে ১৭ দশমিক ১৩ শতাংশ, সন্ধ্যায় ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং রাতে ২০ দশমিক ৩১ শতাংশ।

            মোটসাইকেল দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪০ দশমিক ৯০ শতাংশ, মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ২৭ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং অন্য যানবাহন দ্বারা মোটরসাইকেলকে চাপা বা ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩১ দশমিক ৮১ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ২৮ দশমিক ৩৫ শতাংশের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছর। ৪৭ দশমিক ৭৬ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছর এবং ২৩ দশমিক ৮৮ শতাংশের বয়স ৩৬ থেকে ৬০ বছর।

            ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৭২টি দুর্ঘটনায় ৬৭ জন নিহত হয়েছে। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৮টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছে। একক জেলা হিসেবে দিনাজপুর সবচেয়ে বেশি ১৬ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম শরীয়তপুর, রাঙ্গামাটি, সুনামগঞ্জ, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রাম জেলায়। এই ৫টি জেলায় স্বল্প মাত্রার কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানী ঢাকায় ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছেন।

            সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে রোড সেফ্টি ফাইন্ডেশন জানিয়েছে- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

Share This

COMMENTS