শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নাঙ্গলকোটে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে  নববধূকে তুলে নেয়ার অভিযোগ

নাঙ্গলকোটে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে নববধূকে তুলে নেয়ার অভিযোগ

            তাজুল ইসলাম\ নাঙ্গলকোটে ফিল্মি স্টাইলে হামলা চালিয়ে গায়েহলুদের অনুষ্ঠান থেকে নিপা আক্তার (১৮) নামে এক নববধূকে তুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তরুণীর বাবা বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের চাটিতলা গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের মেয়ে নিপা আক্তারের সঙ্গে গত ২৪শে আগস্ট কোট এফিডেভিটের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী মনোহরগঞ্জ উপজেলার বরল্লা গ্রামের সাইদুল হকের ছেলে বদিউল আলমের বিয়ে হয়। বর ও কনে পরে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে কনেকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাতে কনের গায়েহলুদের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলাকালে একই গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী জুনায়েদ, আদ্রা উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মিলন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ আকিল, ছাত্রলীগ নেতা মনসুর, জিসানের নেতৃত্বে ৭০/৮০ জন মুখোশধারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ীঘর ভাঙচুর করে নববধূ নিপা আক্তারকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তারা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তাদের হামলায় নিপা আক্তারের মা নয়ন বেগমসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।

এ বিষয়ে নববধূর বাবা আব্দুল কাইয়ুম জানান, আমার মেয়েকে তুলে নেয়ার আধাঘণ্টা আগে খবর পেয়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছি আমাকে সহায়তা করার জন্য। কিন্তু পুলিশ কোনো সহযোগিতাই করেনি। পরবর্তী সময়ে ৯৯৯-এ একাধিকবার ফোন করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। সন্ত্রাসীরা ফিল্মি স্টাইলে আমার বাড়িতে তান্ডব চালিয়ে মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ বাড়িতে হাজির হয়। এরপর থেকে একাধিকবার থানায় গিয়েও মামলা নেয়নি পুলিশ। ঘটনার তিনদিন পর থানায় মামলা নিয়েছে। কিন্তু আমার মেয়ের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি তারা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রæত আটক করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি এবং আমার মেয়ের সন্ধান চাচ্ছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আদ্রা উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মিলন মজুমদারসহ একাধিক জনকে ফোন দিলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে অভিযুক্ত আদ্রা উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ আকিল বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। আব্দুল কাইয়ুমের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। এ কারণে তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

নাঙ্গলকোট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রুবেল বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। খবর নিচ্ছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, এ ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে থানা থেকে ফোর্স পাঠানো হয়। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। অপহৃত মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য এবং অভিযুক্তদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Share This

COMMENTS