বৃহস্পতিবার, ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বেড়েছে পেঁয়াজের দামঃ সবজির বাজার ঊর্ধ্বমুখী

বেড়েছে পেঁয়াজের দামঃ সবজির বাজার ঊর্ধ্বমুখী

৩৫ Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ দীর্ঘদিন ধরে পেঁয়াজের দাম ওঠানামা করলেও ১০০ টাকার নিচে নামেনি। সবশেষ জুনের মাঝামাঝি সময়ে সাধারণ মানুষ ১০০ টাকার কমে পেঁয়াজ কিনতে পেরেছিল। যদিও অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই সেই পেঁয়াজের দাম আবার ১০০ পেরিয়ে যায়। এরই মধ্যে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম আবার প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দামের ওপর তাদের হাত নেই, পাইকাররা দাম কমালে তারাও কমাবে। অন্যদিকে সাধারণ ক্রেতারা পেঁয়াজের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন।

            এদিকে, পেঁয়াজের বাজারের মতো সবজির বাজারও ওঠানামা করছে। প্রতিদিনই দাম কমছে-বাড়ছে। আজও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিছু সবজির দাম কমেছে আবার কিছু সবজির দাম বেড়েছে। তবে দাম কমলেও সবজির দাম সহনশীল বলা চলে না। গত শুক্রবার বিভিন্ন কাঁচাবাজার সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

            গত জুন মাসের ১৪ তারিখে ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তখনও দাম বাড়ছিল। সে সময়ই সাধারণ মানুষ ১০০ টাকার নিচে পেঁয়াজ কিনতে পেরেছিল। এরপর থেকে উচ্চ মূল্যেই অবস্থান করছে সব ধরনের পেঁয়াজ।

            বর্তমানে বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১২০ টাকা ও বড় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ১১৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা করে। অর্থাৎ, সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা। এছাড়া আলুর দাম রয়েছে আগের মতোই। লাল আলু ৬০ টাকা, সাদা আলু ৬০ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০ টাকা, দেশি রসুন ২০০-২২০ টাকা, চায়না রসুন ২১০ টাকা, চায়না আদা ২৬০ টাকা, ভারতীয় আদা মানভেদে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ, চায়না রসুনের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।

            পেঁয়াজ কিনতে আসা এক ক্রেতা কাউসার বলেন, পেঁয়াজের দাম অনেকদিন ধরেই ১০০ টাকার ওপরে। এটার দাম কমা উচিত। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কথা সরকারের ভাবা উচিত। এখন সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এদিকে তাদের নজর দেয়া দরকার।

            প্রতিদিনই সবজির দাম কমছে-বাড়ছে। সবজি এখনো উচ্চস্তরেই অবস্থান করছে। ভারতীয় টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। দেশি গাজর ১০০ টাকা, চায়না গাজর ১৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৯০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১১০ টাকা, শসা ৪০-৬০ টাকা, উচ্ছে ৭০ টাকা, করল্লা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, পটল ৫০-৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০-৯০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৭০ টাকা, চাল কুমড়া ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা করে।

            সবজি বেশি সময় তাজা থাকে না বলে এর দাম বাড়বে-কমবে বলে জানায় বিক্রেতারা। এজন্য সবজির দামও স্থির থাকে না বলে মন্তব্য তাদের।

            বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১০০০-২৩০০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০-৭০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০-৭০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭৫০-১৬০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কই মাছ ২০০-৬০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৮০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০-১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০-১১০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৮০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

            এছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ টাকা কেজি দরে। আর বিভিন্ন দোকানে মুরগির লাল ডিম ১৫০ টাকা এবং সাদা ডিম ১৫০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায় সাদা ডিমের দাম বেড়েছে ৫ টাকা করে।

            ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৬৫-১৭০ টাকা, কক মুরগি ২২৫-২৩৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯০-২৯৫ টাকা, দেশি মুরগি ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ, ব্রয়লার, কক, লেয়ার মুরগির দামই রয়েছে প্রায় অপরিবর্তিত। এছাড়া দেশি মুরগির দাম কমেছে ২০ টাকা।

            এদিকে প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মানভেদে ১১০-১৪০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১৩০ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১১৫ টাকা, মাসকলাইয়ের ডাল ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাচি ৪২০০ টাকা, দারুচিনি ১৫০ টাকা, লবঙ্গ ১৪০০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১৬০০ টাকা ও কালো গোলমরিচ ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

Share This