শুক্রবার, ১লা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ছেলে হত্যার প্রতিশোধ নিতেই পিটিয়ে হত্যা

ছেলে হত্যার প্রতিশোধ নিতেই পিটিয়ে হত্যা
১৭২ Views

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লায় পিটিয়ে হত্যার পর ঘরের মধ্যেই মাটিচাপা দিয়ে রেখেছিলেন লাশ। শিয়াল-কুকুরে মাটি আচঁড়ে বের করে ফেলে একটি হাত। বের হওয়া অর্ধগলিত হাত থেকে সৃষ্টি হয় তীব্র দুর্গন্ধ। দুর্গন্ধের উৎপত্তি খুঁজতে গিয়ে দেখেন গর্তে মানুষের হাত। ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বারুর-পিরোজপুর গ্রামের সীমান্তে।

            গত শুক্রবার (২৭শে সেপ্টেম্বর) মাটিচাপা দেয়া অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরপরই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে আটক করা হয়।

            নিহত ব্যক্তির নাম নুরুল ইসলাম (৪০)। তিনি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিওন্দা গ্রামের মরগিছ ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় নোয়াজ আলী (৬০) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। বাকি দুইজন এ হত্যাকান্ডে জড়িত না থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। নোয়াজ আলী হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বড়কান্দি এলাকার আব্দুল আলীর ছেলে।

            লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত নোয়াজ আলীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হওয়ার পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম।

            জানা যায়, নিহত নুরুল ইসলামকে দিনমজুরের কাজের কথা বলে গত ২১শে সেপ্টেম্বর শনিবার দেবিদ্বার নিয়ে আসেন অভিযুক্ত নোয়াজ আলী। ২ জনই থাকতেন চরবাকর-এলাহাবাদ সংযোগ সড়কের সাথে বারুর-পিরোজপুর গ্রামের সীমান্তের একটি ভাড়া ঘরে। নোয়াজ আলী দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় লোক নিয়ে শ্রমিকের কাজ করতেন।

            জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. নাসির বলেন, লাশ দেখার পর আমরা নিহতের সাথে থাকা নোয়াজ আলীকে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ধরে আনি। তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি লোকটা কি ভাবে মারা গেছেন। তিনি এক পর্যায়ে হত্যার দায় স্কীকার করে বলেন, আজ থেকে চার বছর আগে কবিরাজের মাধ্যমে নোয়াজ আলীর ছেলেকে তাবিজ করে মেরে ফেলে নুরুল ইসলাম। এ থেকেই নোয়াজ আলীর রাগ-ক্ষোভ জন্মায় নুরুল ইসলামের প্রতি। এ ঘটনার চার বছর পর গত ২১শে সেপ্টেম্বর শনিবার কৌশলে কাজের কথা বলে দেবিদ্বার নিয়ে আসেন। গত সোমবার গভীর রাতে ঘুমন্ত নুরুল ইসলামকে গাছের গুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পরপরই একই ঘরে মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।

            স্থানীয় মুদি দোকানদার আলী আকবর, রফিকুল ইসলাম ও স্বপ্না বেগম বলেন, সকালে তীব্র দুর্গন্ধ সহ্য করতে না পেরে আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কিন্তু পাইনি। পরে চরবাকর-এলাহাবাদ সংযোগ সড়ক দিয়ে হাঁটাচলার সময় লোকজন দেখতে পান সড়কের পাশে একটি ঘরে গর্তের মধ্যে মানুষের হাত।

            দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদে দু’জনের জড়িত থাকার সত্যতা পাইনি। বাকি একজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হওয়ার পর আদালতে প্রেরণ করা হয়।

Share This

COMMENTS