বৃহস্পতিবার, ১৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত চক্রান্ত চলছে : মির্জা ফখরুল

বিএনপির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত চক্রান্ত চলছে : মির্জা ফখরুল
৩৩ Views

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত চলছে, যার মূল উদ্দেশ্য জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করা।

রোববার গুলশানের হোটেল লেকশোরে ‘তারেক রহমান: দ্য হোপ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল।

ফখরুল বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে, আজ যে অপপ্রচার চলছে—তা কোনোভাবে স্বতঃস্ফূর্ত নয়। এটি একটি সুস্পষ্ট চক্রান্তের অংশ, যার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।”

তিনি বলেন, “এই চক্রান্তের অংশ হিসেবে বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে যে তারেক রহমান সামনে এসেছেন, তাঁকে বিতর্কিত ও খাটো করার চেষ্টা চলছে।”

তারেক রহমানের নেতৃত্বের পেছনে রয়েছে তার নিজস্ব দক্ষতা ও গুণাবলি—এ কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, “শুধু পারিবারিক পরিচয়ের কারণে তিনি নেতৃত্বে আসেননি। তাঁকে ছোট করে দেখানোর জন্য এ বিষয়টি বারবার আনা হয়। অথচ তাঁর নিজস্ব সাংগঠনিক দক্ষতা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং নেতৃত্বের গুণই তাঁকে এখানে এনেছে।”

তিনি আরও বলেন, “ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি—ম্যাডাম খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর আমি সরাসরি তারেক রহমানের সঙ্গে কাজ করেছি। তাঁর মধ্যে যে সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে, তা খুব কম নেতার মধ্যে দেখা যায়। অল্প সময়ে তিনি বিশাল একটি জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তিকে ছড়িয়ে দিয়েছেন।”

বিএনপির মহাসচিব যুব ও ছাত্র সমাজকে দলীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “বিএনপির বিশাল যুব ও ছাত্র শক্তিকে সংগঠিত করতে হবে—এ কাজ আমাদেরই করতে হবে।”

২০০২ সালে খালেদা জিয়ার চীন সফরের স্মৃতিচারণ করে ফখরুল বলেন, “সেই সফরে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গিয়েছিলাম। প্রচণ্ড শীতের কারণে বাইরে অনুষ্ঠান সম্ভব হয়নি, তাই ‘গ্রেট হল’-এ গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে ম্যাডাম আমাদের চীনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। আমার পাশে ছিলেন আমানউল্লাহ আমান, তাঁর পাশেই ছিলেন তারেক রহমান। পরিচয়ের সময় ম্যাডাম বললেন, ‘মাই সান।’ চীনের প্রধানমন্ত্রী তাঁর হাত শক্ত করে ধরে বললেন, ‘Carry the flag of your father and mother.’”

তিনি বলেন, “তারেক রহমান আজ যে অবস্থানে আছেন, তার পেছনে রয়েছে তাঁর সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও দৃঢ়তা। তিনি শারীরিক নির্যাতন, নির্বাসন ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতার যন্ত্রণা সহ্য করেছেন—তবুও কখনও মাথা নত করেননি, মায়ের মতোই দৃঢ় থেকেছেন।”

তারেক রহমানকে ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যতের আশা’ হিসেবে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, “তারেক রহমান নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য আশার প্রতীক। অতীতে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ব্লগাররা আমাদের আন্দোলনে যে ভূমিকা রেখেছেন, ভবিষ্যতেও আমরা তাদের পাশে থাকব।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ এবং সঞ্চালনা করেন শহীদুল ইসলাম বাবুল। এতে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহিদ উর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত, এবং দলের সমর্থিত অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ব্লগাররা। বাসস

Share This

COMMENTS