যুক্তরাষ্ট্রের মুখে আমরা চড় মেরেছি: আয়াতুল্লাহ খামেনি


ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মুখে জোরালো চড় মেরেছি। ইরানকে আত্মসমর্পণ করতে হবে—এ ধরনের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মতো ব্যক্তির মুখে মানায় না।”
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির দুই দিন পর এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জনের জন্য ইরানি জনগণকে অভিনন্দন জানান তিনি।
খামেনি বলেন, “ইসলামি প্রজাতন্ত্র এমন শক্তিশালী হামলা চালাতে পারে, এটা ইহুদিবাদী শাসকরা কল্পনাও করেনি। কিন্তু আল্লাহর সহায়তায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনী শত্রুদের উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে তাদের নগর ও সামরিক ঘাঁটিতে ধ্বংসাত্মক আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। এই হামলা প্রমাণ করে, ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের মূল্য চরমভাবে দিতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে খামেনি বলেন, “তারা সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল, কারণ তারা জানত, তাদের সহায়তা ছাড়া ইসরায়েল টিকবে না। কিন্তু তারা কিছুই অর্জন করতে পারেনি।”
মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো টার্গেট হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই হামলা আন্তর্জাতিক আদালতে স্বাধীন আইনি পদক্ষেপ দাবি করে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এতে কোনো বাস্তব অর্জন করতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট যা বলেছেন, তা অতিরঞ্জিত। তাদের লক্ষ্য পূরণ হয়নি।”
খামেনি আরও বলেন, “আমরা যখন চাই, তখনই এই অঞ্চলের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে পৌঁছাতে পারি। এটি কোনো ছোট বিষয় নয়। ভবিষ্যতেও যদি আগ্রাসন হয়, তাহলে আগ্রাসনকারীদের কঠিন মূল্য দিতে হবে।”
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের “আত্মসমর্পণের” দাবি নিয়ে বলেন, “প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘ইরানকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।’ এটি এখন শুধু পরমাণু সমৃদ্ধকরণ বা প্রযুক্তির বিষয় নয়, এটি আসলে আমাদের অস্তিত্বকে মুছে দেওয়ার আহ্বান।”
খামেনি বলেন, “আমেরিকা কখনো সরাসরি এমন কথা বলত না। তারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নারীর অধিকার বা পরমাণু উন্নয়নের অজুহাত দিত। এবার তারা মুখোশ খুলে বলেছে, তাদের লক্ষ্য ইরানের আত্মসমর্পণ।”
তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, “একটি জাতিকে ‘এসো আত্মসমর্পণ করো’ বলা অবমাননাকর। ইরানি জনগণকে বুঝতে হবে, এটাই আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সংঘাতের প্রকৃতি। তারা কখনো আমাদের স্বাধীনতাকে মেনে নেবে না। কিন্তু আমরা কখনোই আত্মসমর্পণ করব না—কখনোই না।”